শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে অপহরণকৃত শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার ও হত্যার রহস্য উদঘাটন লালমনিরহাটে মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল; ক্রেতারা স্বস্তিতে লালমনিরহাটের বিএনপি নেতার অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিল প্রশাসন লালমনিরহাটে শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বসতবাড়িতে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য নারী কৃষকদের মাঝে বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে তৃতীয় শ্রেণির মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে চাঁদার দাবি না পেয়ে হত্যা তিস্তা ভবন রংপুরে স্পার বাঁধের ভাঙন রোধের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে বাংলাদেশ স্কাউটসের ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে “তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
রাজনৈতিক সংস্কার ও প্রস্তাবনা সম্পর্কে কিছু কথা-

রাজনৈতিক সংস্কার ও প্রস্তাবনা সম্পর্কে কিছু কথা-

:: সুপেন দত্ত ::
রাজনৈতিক সংস্কার ও প্রস্তাবনা: এক নদী রক্ত প্রেরিয়ে চূড়ান্ত ভাবে কালের চক্রে একটি গণতন্ত্রহীন, কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের (৫ আগষ্ট, ২০২৪) পতনের মাধ্যমে ২০২৪ সালে জাতির সামনে এসেছে জাতি গঠনের এক অন্যান্য সুযোগ। এ গণ আন্দলন যদি ব্যর্থ হয় তাহলে জাতীয় এতো আত্মত্যাগ, হত্যা, খুন, গুম সব ব্যর্থ হয়ে যাবে। মানুষ ভাবতে শিখেছে কেন এরূপ হলো। এখানে রাষ্ট্রতন্ত্রেণ কোন কোন জায়গায় ত্রুটি রয়েছে যার ফলে একজন প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রের হর্তাকর্তা হয়ে যায়। আর একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় এ দেশে যতবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে ততোবার দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠি অত্যাচারের স্বীকার হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই কতগুলো বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি হয়েছে। যেমন:-

সংবিধান সংক্রান্ত:
১। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা।
২। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন।
৩। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা, দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতি দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এবং প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না।
৪। বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা ও উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছ বিধান করা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
৫। সংবিধানের প্রস্তাবনায় সকল গণ আন্দলনের ভূমিকা ও অবদান সংযুক্ত করা।
৬। সংবিধানের ন্যায়পাল কার্যকর করা এবং তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী পদমর্যদা লাভ করবেন।
৭। সংসদ সদস্যরা স্থানীয় উন্নয়ন কর্মসূচিতে ও মাঠ প্রশাসনের উপর কর্তৃত্ব করতে পারবেন না।
৮। নির্বাচিত দল নির্বাচিত হলে নির্বাচন ইস্তেহারে বর্ণিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন না করলে, রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধান বিচারপতির নিকট জবাবদিহি করা।
৯। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের অর্ন্তভূক্তিমূলক অংশগ্রহণ নিশ্চয়তা বিধানে সংখ্যালঘু ও নৃগোষ্ঠি নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা আইন পাশ করে তাদের নিরাপত্তা ও সাংবিধানিক নাগরিক অধিকার সুচিশ্চিত করা।
১০। জনপ্রশাসনের কর্মচারীদেরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে কাজ করার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা।

নির্বাচণ সংক্রান্ত:
১। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ ও জাবাবদিহিতা নিশ্চিতের বিধান করা। কোন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশন নিয়োগ না করা।
২। রাজনৈতিক দল গঠন, নিবন্ধন, হিসাব, কার্যক্রম প্রতিবেদন ও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতে সকল স্তরে কাউন্সিল অধিবেশন বাধ্যতামূলক করা বিধান করা। কোন দলে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ না থাকা। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বিদেশে রাজনৈতিক দলের শাখা না থাকা।
৩। ভোট কেন্দ্রে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সকল ভোটের ফলাফল কেন্দ্রে ঘোষণা না করে কেন্দ্রীয় ভাবে ঘোষণা করা।
৪। প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিধান রাখা।
৫। নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার ও ভোটাকে পরিচিত করার প্রতিরোধ ব্যবস্থা রাখা (প্রার্থীতা বাতিল)।
৬। জাতীয় নির্বাচনে ব্যবসায়ী ও আমলাদের বাদ দিয়ে রাজনীতিবিদদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
৭। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করা।
৮। নির্বাচনে বিজয়ী দলের সাধারাণ সম্পাদককে মন্ত্রীত্বর দায়িত্ব না দেয়া তবে তিনি মন্ত্রীর মর্যাদা পাবেন।

ছাত্র রাজনৈতিক সক্রান্ত:
১। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার জন্য কোন রাজনৈতিক দলের লেজুর বৃত্তিকরা ছাত্র সংগঠন নিষিদ্ধ করা।
২। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করা। যাতে ছাত্ররা নির্বাচন ও নেতৃত্ব সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
৩। কোন জাতীয় ইস্যু অথবা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন সৃষ্টি করা (কোটা সংস্কার আন্দোলন) এবং জনমত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখা।
৪। জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
৫। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-ছাত্র যোগসাজসে যেন কোন দূর্নীতি/ অপকর্ম প্রতিষ্ঠিত না হয় তার প্রতি ছাত্রদের সজাগ থাকা, যাতে ভর্তি বাণিজ্য হলের সিট বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজী বন্ধ হয়।
৬। বিভিন্ন সেবামূলক কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করা (বন্যায় ত্রাণ) যাতে জনগণ ছাত্রদের প্রতি আস্থা/ভরসা করতে পারে।

বর্তমান সংবিধানে ১১টি অধ্যায় ও ১৫৩টি অনুচ্ছেদ সহ ১৭টি সংশোধনি রয়েছে যা জাতীয় প্রয়োজনেই প্রণীত হয়েছে। প্রত্যকটি অনুচ্ছেদ জতীয় প্রয়োজনে সংবিধানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানের চাহিদা অনুযায়ী শুধুমাত্র যে বিষয়গুলিতে ইতিমধ্যেই জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই বিষয়গুলি সংবিধানে সংযুক্ত, প্রতিস্থাপন, সংশোধন করাই সহজ পথ। পূর্বের সবকিছু বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান রচনা জাতির বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে যা হবে জাতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কোন কিছুই জোর করে চাপিয়ে দেয়া যাবে না। যদি সংবিধানে জনআকাংখ্যার প্রতিফলন, শ্রদ্ধাবোধ ও প্রতিশ্রুতি থাকে তাহলে সংবিধান রক্ষার জন্য দেশ প্রেমিক নাগরিকগণ সংবিধান রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বে।

যেহেতু সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন তার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজনের জন্য অবশ্যই নির্বাচিত সংসদ প্রয়োজন। কিন্তু দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক বিষয়গুলি রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে করা যেতে পারে যা পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ প্রথম অধিবেশনে অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা থাকবে। এ বিষয় জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে। তাহলেই ২৪ এর গণ আন্দোলনে অর্জিত সুফলগুলি সর্বদলীয় জাতীয় ঐক্য মতের ভিত্তিতে সংবিধানে সু-প্রতিষ্ঠিত হবে।

[লেখক: সুপেন দত্ত, ব্যাংক কর্মকর্তা (অবঃ), উন্নয়ন কর্মী ও সনাক সদস্য, (টিআইবি), লালমনিরহাট। মোবাইল: ০১৭১৬০০৭৪৪৯।]

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone